Friday, 30 August 2013

৪ টি মোবাইল অপারেটর থ্রিজি লাইসেন্স পাচ্ছে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল

অবশেষে বহুল কাঙ্ক্ষিত থ্রিজি তরঙ্গ নিলাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে হচ্ছে না কোন প্রতিযোগিতা। আজ ২৯ আগস্ট পূর্বনির্ধারিত ‘বিড আর্নেস্ট মানি’ জমা দেওয়ার শেষ তারিখে টাকা জমা দিতে পারেনি মোবাইল অপারেটর সিটিসেল। ফলে প্রতিযোগিতাহীন থ্রিজি লাইসেন্স পাচ্ছে ৪ টি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল। এ ব্যাপারে বিটিআরসির পরিচালক (মিডিয়া উইং) জাকির হোসেন খান প্রিয়.কমকে জানিয়েছেন, অর্থ সংকটের কারণে সিটিসেল থ্রিজি নিলামে অংশ নিতে পারছে না এবং তাদের জন্য নতুন করে কোন সুযোগও দেওয়া হবে না।
জানা গেছে, আজ টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখে ‘বিড আর্নেস্ট মানি’ জমা দেওয়ার জন্য নতুন করে সময় চাওয়ার চিন্তা করেছিল অপারেটররা।
কিন্তু বিটিআরসি কোনভাবেই সময় বৃদ্ধি করতে রাজি না হওয়াতে শেষ পর্যন্ত আজকেই টাকা দিতে বাধ্য হয় অপারেটররা।
নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য পাঁচটি অপারেটর আবেদন করেছিল। আর সংশ্লিষ্ট কমিটি সব আবেদনকে যোগ্য ঘোষণা করে।
কিন্তু নির্ধারিত সময় বৃহস্পতিবার সিটিসেল বিড মানি জমা না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছে।
প্রত্যেক অপারেটরকে ২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ১৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিডমানি জমা দিতে হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি কার্যালয়ে ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদের কাছে এ টাকা জমা দেয় অপারেটরারা।
এখন ৪ টি লাইসেন্সের জন্য ৪ টিই প্রতিযোগী। তাই কারোরই বাদ পড়ার কোন আশংকা নেই। গিয়াসউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বির্ড আর্নেস্ট মানি জমা দেয়ার মাধ্যমে নিলাম প্রক্রিয়া সক্রিয়ভাবে শুরু হলো।
পে অর্ডার জমা দেয়ার পর গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, “সিম রিপ্লেসমেন্ট ইস্যুসহ অন্যান্য বিষয়ে সরকার ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে, নিলামের আগেই এসব সুরাহা হবে বলে আশা করি।”
নিলামের মাধ্যমে শুধু তরঙ্গ মান ও পরিমাণ নির্ধারিত হবে। এর ফলে তরঙ্গ বিক্রি থেকে কাঙ্খিত রাজস্ব পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে গেছে।
থ্রিজি নিলামে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিয়াদ সাতারা প্রিয়.কমকে বলেছেন, ‘‘থ্রিজি তরঙ্গ নিলামে অংশ নেওয়াটা আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ এদেশের মোবাইল ফোনের বাজারে বাংলালিংক সবসময়ই একটি বড় চ্যালেঞ্জার এবং দিনবদলের পথিকৃৎ। থ্রিজি তরঙ্গ নিলামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা গ্রাহকদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি উপহার দিতে আরো একবার আমাদের সেই প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন ঘটিয়েছি।
আমাদের উন্নততর গ্রাহকসেবা দেওয়ার নিরলস প্রচেষ্টাকে অধিকতর বেগবান করে তোলার ব্যাপারে সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাসহ সব পক্ষকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।’’
জানা গেছে, কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করবে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
এর পর প্রত্যেকে ২০ কোটি ডলার করে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলালিংক ডিজিটাল লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল।
অন্যদিকে একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড থ্রিজির জন্য আবেদন করলেও এ কোম্পানিকে কার্যত নতুনভাবে বড় কোনো বিনিয়োগ করতে হবে না। পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি সেবা দিতে থাকা এ কোম্পানি ইতোমধ্যে অনেক অবকাঠামো তৈরি করেছে।
টেলিটকসহ সব জিএসএম মোবাইল অপারেটর থ্রিজি লাইসেন্স পেলেও পাচ্ছে না শুধু সিডিএম প্রযুক্তির মোবাইল ফোন সিটিসেল। এ ব্যাপারে কথাও বলেছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আর্থিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে সিটিসেল টাকা জমা দেয়ার সময় বৃদ্ধি ও স্পেকট্রাম রাখার সুপারিশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সিটিসেলের এ সুপারিশ রাখার কোনো সুযোগ নেই, তবে নিলামের পর যদি স্পেকট্রাম বাকি থাকে, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তা বিক্রি করা হবে।
সিটিসেল নিলামে না আসাতে প্রতিযোগিতা কমে যাবে কি না জানতে চাইলে বিটিআরসি প্রধান বলেন, নিলামে প্রতিযোগিতার সুযোগ রাখা হয়েছে, প্রথম ফেইজে দুটি ব্লকে নিলাম হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বিটিআরসি থ্রিজি ফোনের ৪ টি লাইসেন্স দেবে। এর জন্য আগামী ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে তরঙ্গ নিলাম।

No comments:

Post a Comment